ঢাকা,বৃহস্পতিবার, ২ মে ২০২৪

মাতারবাড়ীর আইন-শৃঙ্খলা চরম অবনতি: পুলিশের বিচার বানিজ্য জমজমাট

ছালাম কাকলী, মাতার বাড়ী মহেশখালী : 

মাতারবাড়ীর আইন-শৃঙ্খলা চরম আবনতি ঘটেছে। গত দেড় বৎসরে বৃদ্ধ নজির হত্যা, রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার পূর্ব পাশে কোহেলিয়া নদী থেকে অজ্ঞাত এক যুবকের বস্তা বন্দি লাশ উদ্ধার, দুই জন গৃহ বধুর বিষপানে আত্মহত্যা মাতারবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর আত্মহত্যা, আইডিয়াল স্কুল সংলগ্ন খাল থেকে এক গৃহ বধুর লাশ উদ্ধারসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্ম ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এ অবস্থা দেখলে মনে হয় মাতারবাড়ী আইন-শৃঙ্খলা দেখার কেউ নেই। পুলিশ ক্যাম্পের আবস্থা দেখলে মনে হয় এটা বিচার কার্যালয়ের একটি স্থান। এ ভাবে পুলিশ ক্যাম্পে আগত ফরিয়াদীরা হয়রানি শিকার হচ্ছে বলে ভূক্তভোগীরা জনান।

সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা যায়, মাতারবাড়ী ইউনিয়নটি মহেশখালী উপজেলার ভৌগলিক মানচিত্র থেকে আলাদা একটি দ্বীপ। এ ইউনিয়নের জন সংখ্যা বর্তমানে ৯০ হাজার বলে এক পরিসংখ্যানে জানা গেছে। এ ইউনিয়নের দু’দিকে দু’টি কয়লা বিদ্যুৎ স্থাপন হওয়ায় বহিরাগত লোকজনের আসা-যাওয়া বেড়েছে ব্যাপক হারে। অথচ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নজর না থাকায় এতাদঞ্চলের আইন-শৃঙ্খলা চরম অবনতি ঘটছে দিনের পর দিন। গত দেড় বৎসর পর্বে মাতারবাড়ীর ৮০ বৎসরে বৃদ্ধা নজির আহমদ নামের এক ব্যাক্তির কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা ডাকাতি করে কে বা কারা তাকে মজিদিয়া সুন্নিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার উত্তর পার্শ্বের কবরস্থানে ফেলে দেয়। পর দিন এলাকা বাসীর সহযোগীতায় মাতারবাড়ীর পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হন। এ ঘটনায় পুলিশ কয়েজন কে সন্দেহ জনক ভাবে আটক করে জেলে পাঠিয়েছে। অথচ এ ঘটনা সাথে জড়িত মূলনায়করা গ্রেপ্তার না হওয়ায় উক্ত হত্যা ঘটনা ধামা চাপা পড়ে যাচ্ছে। অপরদিকে কোহেলিয়া নদী থেকে বস্তা বন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনার সাথে জড়িতদের উদ্ধার করতে প্রশাসন সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়া দুই জন গৃহ বধুসহ তিন জনের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। আপর দিকে ইয়াবা সেবন ও বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায় এখানকার আইন-শৃঙ্খলা মাতারবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গেছে। কথায় কথায় ঝগড়া, স্বামী-স্ত্রীর বনিবনায় অসন্তোষ ও জমিন নিয়ে বিরোধসহ বিভিন্ন ঘটনার ব্যাপারে জন প্রতিনিধির কাছে না গিয়ে এক শ্রেণীর দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পে বিচার দিচ্ছে। এ অবস্থা দেখে মনে হয়, মাতারবাড়ীতে জন প্রতিনিধির কোন দায়িত্ব নেই। অথচ পুলিশ আইন মতে থানা, তদন্ত কেন্দ্র, পুলিশ ফাঁিড় ও পুলিশ ক্যাম্পে নিয়োজিত পুলিশ বাহিনী আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখা জন্য সর্বদা নিয়োজিত থাকবে। এ হারে পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্ব হল পুলিশ ফাঁড়িকে নোট দিয়ে এলাকায় রণ পাহারায় বের হওয়া তাদের দায়িত্ব।

কিন্তু পুলিশ ক্যাম্প ও পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত অফিসাররা মামলা তদন্ত অথবা বিচার করতে পারবেনা। উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতে শুধু মামলা তদন্ত করতে কিংবা অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে পারবে তদন্ত কেন্দ্রের অফিসাররা। কিন্তু পুলিশ ক্যাম্পে অভিযোগ নিয়ে বাদী- বিবাদীকে স্ব-স্ব ক্যাম্পের অফিসাররা নোটিশ দেওয়া আইন বহিভূর্ত। এ আইন তোয়াক্কা না করে মাতারবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পের আইসি ফরিয়াদিদের কাছ থেকে অভিযোগ নিয়ে নিজেই উভয় পক্ষকে নোটিশ দেয়ায় মাতারবাড়ী পুলিশ ক্যাম্পে দৈনিক অন্ত:ত পক্ষে দুই থেকে তিনটি বিচার করতে ব্যস্ত থাকায় মাতারবাড়ীতে এক শ্রেণীর সুযোগ সন্ধানী দালাল চক্রের কারণে এখানকার আইন-শৃঙ্খলা চরম অবনতি ঘটছে।

পাঠকের মতামত: